ময়মনসিংহ শহরে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া এক আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে যুবলীগের ২৫ থেকে ৩০ জন নেতা-কর্মীর নামে পৃথক দুটি মামলা করেছে। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই আসামিকে পুলিশ যুবলীগ কর্মী বললেও ময়মনসিংহ মহানগর যুবলীগের পক্ষ থেকে দলে তাঁর সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করা হয়নি।
পুলিশের অভিযোগ, ঘটনাটি গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঘটে। ময়মনসিংহ শহরের কলেজ রোড এলাকায় অপু নামে যুবলীগের এক কর্মী হজরত আলী নামের এক ব্যক্তির মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে ২ নম্বর পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অপুকে গ্রেপ্তার করে। অপুর নামে হত্যাচেষ্টার মামলাসহ ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
অপুকে পুলিশের গাড়িতে করে ২ নম্বর ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় কলেজ রোড মোড় এলাকায় ১০ থেকে ১৫ জন যুবক পুলিশের গাড়ির পথরোধ করে। একপর্যায়ে ওই যুবকেরা পুলিশের গাড়ি থেকে অপুকে ছিনিয়ে নিয়ে যান।
পুলিশের দাবি, ময়মনসিংহ মহানগর যুবলীগের সদস্য মনিরুজ্জামান রনির নেতৃত্বে অপুকে ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল টাউন হল মোড় এলাকায় অবস্থিত ২ নম্বর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা করে। হামলাকারীরা ফাঁড়ির অফিস কক্ষে ঢুকে চেয়ার ছুড়ে মেরে টেবিলের কাচ ভাঙে। কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। হামলা শেষে পালিয়ে যাওয়ার সময় শান্ত নামের এক হামলাকারীকে আটক করে পুলিশ।
পুলিশের অভিযানে থাকা ২ নম্বর ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফারুক হোসেন বলেন, অপু একাধিক মামলার আসামি। তাঁর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। তিনি পলাতক ছিলেন। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর মহানগর যুবলীগের সদস্য মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালানো হয়। এ সময় ফাঁড়িতে পুলিশের সংখ্যা কম ছিল। হামলাকারীদের তাৎক্ষণিক প্রতিহত করা সম্ভব হয়নি।
হামলার পর গত বৃহস্পতিবার রাতে কলেজ রোড এলাকায় ব্যাপক অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানে সাজ্জাদ ও মনিরুজ্জামানের ভাই তানভীরকে আটক করা হয়। পরে আটক করা ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
আসামি ছিনতাই ও হামলার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে দ্রুত বিচার আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়। ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় করা দুটি মামলায় মনিরুজ্জামানসহ ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়। আসামিদের অনেকে যুবলীগ কর্মী বলে জানায় পুলিশ।
আজ শুক্রবার সকালে ২ নম্বর পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে দেখা যায়, অফিস কক্ষের টেবিলের কাচ ভাঙা। এ সময় ফাঁড়িতে আসেন ময়মনসিংহ রেঞ্জের পুলিশের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (ভারপ্রাপ্ত উপমহাপরিদর্শক) আক্কাস উদ্দিন ভুঁইয়া, ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এ নেওয়াজী। মো. আক্কাস উদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা হবে। ঘটনার পর থেকে আসামিরা গা ঢাকা দিয়েছেন।
ময়মনসিংহ মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক শাহীনুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। আমরা দলের পক্ষ থেকে সভা করব। পুলিশ ফাঁড়িতে হামলার সঙ্গে মনিরুজ্জামানের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে অপু যুবলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন।
No comments:
Post a Comment
Thanks for your comment :)